ফিলিস্তিনের গাজার অধিবাসী রংপুর মেডিক্যাল কলেজের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী মনসুর মুসা বলেছেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনীর তাণ্ডব মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। গত কয়েক মাসে আমার পরিবারের ১৬ থেকে ১৮ ভাগ স্বজনকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে। সেখানে মানবতা চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। অনেক স্বজনের খোঁজ নেই, তারা মারা গেছেন নাকি বেঁচে আছেন জানি না।’শনিবার (১২ এপ্রিল) রাতে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোড এলাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে গাজার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন।
তিনি বলেন, ‘আমি গাজার অধিবাসী, ওখানেই আমার জন্ম। ডাক্তারি পড়তে রংপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম। বর্তমানে আমি শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী।’গাজার পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে তিনি বলেন, ‘গাজায় এখন যা হচ্ছে প্রতিটি মুহূর্তে সেখানে গাজাবাসীকে মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ইসরায়েলি বাহিনী নির্বিচারে বোমা নিক্ষেপ করছে। নারী-শিশু কেউই তাদের কাছে নিরাপদ নয়। তারা গাজাবাসীর রক্ত নিয়ে হোলি খেলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গাজায় এখন কোনও নিরাপদ জায়গা নেই। গাজাবাসীর ন্যূনতম কোনও জীবনের নিরাপত্তা নেই। অবকাঠামো বাড়িঘর হাসপাতালসহ সব ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। সেখানে গাজাবাসীকে শতভাগ মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে। তবে আমরা আশাবাদী, বিশ্ববিবেক জাগ্রত হয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতা কমবে।’মুসা বলেন, ‘গাজায় আমার মা-বাবা, স্বজনরা কেমন আছেন সেই খবর পাই না। অনেক কষ্টে কথা বলা যায়। কারা জীবিত কারা শহীদ হয়েছে বাস্তব খবরটা পাচ্ছি না। সেখানে প্রতি সেকেন্ডে হামলা করছে ইসরায়েলি বাহিনী। কখন কার মৃত্যু হবে একমাত্র মহান আল্লাহ জানেন।’
ফিলিস্তিনি এই শিক্ষার্থী বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, তারা (বাংলাদেশি) প্রথম থেকে ফিলিস্তিনের জনগণের পাশে আছে। বিভিন্নভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করছে—এজন্য আমরা চিরকৃতজ্ঞ থাকবো।’ মতবিনিময়কালে মনসুর মুসার দুই সহপাঠী তার সঙ্গে ছিলেন।
বাংলাস্কুপ/প্রতিনিধি/এনআইএন